লুব্রিকেন্টের অয়েল এর বৈশিষ্ট্য

আজকে আলোচনা করবো লুব্রিকেন্টের বৈশিষ্ট্য নিয়ে। তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক। -


ভেজাল বা মানহীন লুব্রিকেন্ট চিনবেন উপায়?

অরিজিনাল বা ভালো লুব্রিকেন্ট চিনতে হলে আগে আপনাকে ভেজাল লুব্রিকেন্ট সম্বন্ধে জানতে হবে। তবেই আপনি তুলনা করতে পারবেন কোন লুব্রিকেন্ট কেমন? ভেজাল বা মানহীন লুব্রিকেন্ট এর বৈশিষ্ট্য বা লক্ষণগুলো হলোঃ


★ লুব্রিকেন্টের ড্রাম অথবা বোতল/ক্যান খোলার পরে উদ্ভট গন্ধ পাবেন যা খুবই ঝাঁঝালো। মনে রাখবেন যত তীব্র উদ্ভট গন্ধ ততই বেশী মাত্রায় ভেজাল মিক্স হয়ে থাকে।

★ অরিজিনাল লুব্রিকেন্ট এর রং সোনালী ও স্বচ্ছ হয়ে থাকে। অরিজিনাল লুব্রিকেন্ট সাদা কাঁচের গ্লাসে/পাত্রে রাখলে এপাশ থেকে ওপাশ দেখা যাবে। যেসব লুব্রিকেন্ট লালচে, কালচে, নীলচে, হালকা সবুজ রংয়ের হয়ে থাকে সেগুলো বেশিরভাগ রিসাইকেল লুব্রিকেন্ট এবং ভেজাল মিক্সিং হয়ে থাকে।


★ ভিস্কোসিটি বা ঘনত্বের উপর পর্যবেক্ষন করলেও আপনি বুঝতে পারবেন যে লুব্রিকেন্টের ভিতরে কি পরিমাণ ভেজাল মিক্সিং আছে? বোতল বা ক্যানের গায়ে লেখা ভিস্কোসিটি বা ঘনত্বের গ্রেডের সাথে ভেজাল লুব্রিকেন্টের ভিস্কোসিটির সাথে মিল থাকে না। এক্ষেত্রে ভেজাল লুব্রিকেন্ট পানির মত পাতলা হয়ে থাকে যা আঙুল চুবিয়ে উঠালে আপনি বুঝতে পারবেন।


★ কিছু অসাধু লুব্রিকেন্ট ব্যবসায়ী লুব্রিকেন্ট এর পরিমাণ ও অবৈধ আয় বাড়াতে ১ ড্রাম লুব্রিকেন্ট এর মধ্যে ২ ড্রাম ডিজেল/গান্ধার অয়েল মিশিয়ে ব্লেন্ডিং করে দেয়। ডিজেল/গান্ধার অয়েল মিক্সিং লুব্রিকেন্ট থেকে ডিজেল/ গান্ধার অয়েলের বিশ্রী গন্ধ তৈরি হয়। কেউ কেউ এই বিশ্রী গন্ধ দূর করার জন্য উচ্চ মাত্রার পারফিউম ঢেলে ডিজেলের গন্ধটাকে লুকানোর চেষ্টা করে।


★ লুব্রিকেন্টের ড্রাম/বোতল/ক্যানের তলায় গাদ জমে, চাকা চাকা, দলা দলা দেখলে ধরে নেবেন সেই লুব্রিকেন্টের ভিতরে ভেজাল রয়েছে।

★লুব্রিকেন্টের বোতল/ ক্যান/ বালতির ভিতরে ময়লা পেলে ধরে নেবেন এই লুব্রিকেন্ট মানসম্মত উপায়ে আপনার জন্য প্রস্তুত করা হয়নি। দ্যাট মীনস্- মায়ে বানায়, পুতে প্যাকেট করে আর বাপে বেঁচে। 


★ভেজাল লুব্রিকেন্ট আপনার ইঞ্জিনে দিলে আপনার ইঞ্জিন দ্রুত গরম হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন লুব্রিকেন্ট আপনার ইঞ্জিনে কুলিং এজেন্টেরও কাজ করে। অরিজিনাল লুব্রিকেন্ট এ আপনার ইঞ্জিন দ্রুত গরম হবে না, কিন্তু ভেজাল লুব্রিকেন্ট এ আপনার ইঞ্জিন খুব দ্রুতই অত্যাধিক গরম হয়ে যাবে।


★আপনার ইঞ্জিনে লুব্রিকেন্ট দেওয়ার পর যদি অত্যাধিক কালো ধোঁয়া ছাড়ে, উদ্ভট বিশ্রী আওয়াজ তৈরি হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন ওই লুব্রিকেন্টে ভেজাল রয়েছে।


★ ভেজাল লুব্রিকেন্ট ইঞ্জিনে দেওয়ার কিছুদিন পর ড্রেন দিলে সেটা কাঁদা কাঁদা অত্যাধিক কালো কুচকুচে হয়ে যাবে এবং যে পরিমাণ লুব্রিকেন্ট থাকার কথা সেই পরিমান লুব্রিকেন্ট থাকবে না। ভেজাল লুব্রিকেন্ট বেশিরভাগই উড়ে যায়, ক্ষয় হয়ে যায়, পুড়ে যায়।

আসুন আপনার শখের বা রক্ত পানি করা অর্থ দিয়ে কেনা ইঞ্জিনটার প্রতি যত্নবান হই। ইঞ্জিনের ভিতরে রয়েছে নির্জীব এক প্রাণ। সে কেবল আমাদের শক্তি দিয়েই যায়, তাই তাকেও ভালো কিছু দিন। লুব্রিকেন্ট হচ্ছে ইঞ্জিনের রক্ত। দয়া করে ইঞ্জিনে দূষিত রক্ত দিবেন না। 

lub oil



বিঃদ্রঃ কিছু অসাধু লোভী লুব্রিকেন্ট ব্যবসায়ীরা বোতল, ক্যান, বালতি এবং ড্রামে লুব্রিকেন্ট ওজনে/পরিমাপে কম দিয়ে থাকে এটাও অসাধু ব্যাবসায়ীদের একটা প্রতারণার কারসাজি। তাই সন্দেহ হলেই নিজে থেকে আলাদা মেপে নিন। আসুন আমরা সবাই প্রতারণার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই। প্রতারণার হাত থেকে নিজে বাঁচুন, অপরকেও প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে দিন।

إرسال تعليق

أحدث أقدم